ইন্টারনেট জগতের ১০ টি আশ্চর্য সত্য, যা শুনলে আপনি থমকে যাবেন!

ইন্টারনেট জগতের ১০ টি আশ্চর্য সত্য, যা শুনলে আপনি থমকে যাবেন: আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে ১০ টি আশ্চর্য সত্য যা শুনলে হয়তো আপনি থমকে যাবেন। আমি নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছিলাম কথা গুলো শুনে।

ইন্টারনেট জগতের ১০ টি আশ্চর্য সত্য, যা শুনলে আপনি থমকে যাবেন!
ইন্টারনেট জগতের ১০ টি আশ্চর্য সত্য, যা শুনলে আপনি থমকে যাবেন!

১) ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যাঃ আমরা অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করি এবং জানি যে এটার গুরুত্ব অনেক। কিন্তু কেউ কি জানেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা কি হারে বাড়ছে?
২০০২ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০০ মিলিয়ন আর এখন সেটা এসে দাঁড়িয়েছে ২.২ বিলিয়নে। এক দশকে প্রায় ৩৬৭% বেড়েছে।
ভবিষ্যতে কত হবে সেটা ভাবতে পারছেন? এমন একদিন হয়তো আসবে যখন ইন্টারনেট যে ব্যবহার না করবে তাকে পাগল বলবে মানুষ।

২) ফেসবুক সম্পর্কে একটি আশ্চর্য সত্যঃ আমরা সবাই ফেসবুকে ছবিতে, স্ট্যাটাসে লাইক দেই কিন্তু আমরা কি জানি প্রতিদিন কতটা লাইক হচ্ছে? বর্তমানে ফেসবুকের অ্যাক্টিভ ব্যবহারকারির সংখ্যা হচ্ছে ১.২১ বিলিয়ন। সবাই প্রতিনিয়ত ছবি ভিডিও আপলোড করছে। এখন চলুন সেই আশ্চর্য সত্যটা জানি,
ফেসবুকে প্রতিদিন ৫০০ টেরাবাইট ডাটা আদান প্রদান হয়, প্রতিদিন প্রায় ২.৭ বিলিয়ন লাইক হয় এবং ৩০০ মিলিয়ন ছবি আপলোড হয়।
১০২৪ গিগাবাইটে হয় ১ টেরাবাইট, প্রতিদিন ৫০০ টেরাবাইট ডাটা আদান প্রদান কি বাড়ির কাছে? আমি নিজেই প্রতিদিন অন্তত ১ এমবি আপলোড করি (Proud)

৩) স্প্যামিং সম্পর্কে একটি তথ্যঃ স্প্যামাররা অনেক সচেতন!! সোশাল মিডিয়াতে আমরা যেসব লিঙ্ক দেখি তার অনেক গুলোই স্প্যাম যেখানে ক্লিক করলে আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
আমরা ফেসবুক টুইটার সহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়াতে যেসব অ্যাকাউন্ট দেখি তার শতকরা ৪০ ভাগ অ্যাকাউন্ট স্প্যামারদের খোলা। সকল মেসেজের মধ্যে শতকরা ৮ ভাগ মেসেজ পাঠানো হয় স্প্যামারদের দ্বারা।
আমি কয়েকদিন পর পর মেসেজ পাই, আফ্রিকান কোন মেয়ের ছবি দেওয়া প্রোফাইল থেকে পাঠায়, এমন সুন্দর করে কথা বলে যেন আমি তার হাজার বছরের পরিচিত। এদের একটা লক্ষন হল আপনার সাথে ফেসবুকে কথা বলবে না বরং মেইল চাইবে। এরকম দেখলেই সাবধান হয়ে যাবেন, অনেকেই আছেন এমনকি একসময় আমি নিজেও এমনটা করতাম, যেকোনো মেয়ে দেখলেই চ্যাট করতে ইচ্ছা করতো তবে এখন থেকে সতর্ক থাকবেন, বাংলাদেশি মেয়েদের (হয়তো আপনার ভাই-ব্রাদার :D) সাথে চ্যাট করেন কিন্তু আফ্রিকান মেয়েদের সাথে কইরেন না।

৪) গুগল সার্চ সম্পর্কে একটি সত্যঃ হেহেহেহে!! মামার কথা আর কি বলবো, কদিন পর পর শুনি এই কম্পানিকে গুগল কিনে নিয়েছে ঐ কম্পানিকে গুগল কিনে নিয়েছে। সে শুধু বড় হচ্ছেই, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪৫ টার মতো কম্পানি গুগল কিনেছে/মার্জ করেছে। এই গুগল যে একদিন কত বড় হবে তা ভাবলেই আমার মাথা ঘুরে।
প্রতি মাসে গুগল ১০০ বিলিয়ন সার্চ করে তার মানে হল প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪০,০০০ সার্চ রেসাল্ট আমাদেরকে দেয়।
যেদিন শুনেছিলাম যে পৃথিবীর প্রথম মোবাইল ফোন তৈরিকারী কম্পানি মটোরোলাকে কিনে নিয়েছে গুগল সেদিন আসলেই অবাক হয়েছিলাম। এত বড় একটা কম্পানি যেটা কিনতে গুগলকে গুনতে হয়েছে ১২.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। তাছাড়া ব্লগার, অ্যান্ড্রয়েড, ইউটিউব, প্লিঙ্ক, ওয়েয, পিকাসা এসব তো আছেই।

৫) ওয়েবকেম সম্পর্কে একটি মজার তথ্যঃ প্রযুক্তির যত সব নতুন নতুন আবিষ্কার দেখি তার সবগুলোই কোন না কোন প্রয়োজনবোধ থেকে এসেছে। ওয়েবকেম নিঃসন্দেহে একটি আশ্চর্য আবিষ্কার যদিও এখন আমাদের কাছে তেমন আশ্চর্য মনে হয় না।
কেমব্রীজ ইউনিভার্সিটির কয়েকজন অলস ছাত্ররা ওয়েবকেম আবিষ্কার করেছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিজের রোমে বসে কফি রোমের খবর রাখা।
Trojan Room coffee pot একটি কফি রাখার পাত্র ছিল কেমব্রীজ ইউনিভার্সিটিতে। ওয়েবকেমটা বানানো হয়েছিল যেন সেই পাত্রের কফি শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য যেন বার বার ঐ রোমে না যেতে হয়। ওদের মতো অলস হতে পারলেও ভালো অলসতার বহিঃপ্রকাশ হল আজকের নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় ব্যাবহৃত শক্তিশালী ক্যামেরা।
Dr. Quentin Stafford-Fraser এবং Paul Jardetzky এই দুজন হলেন প্রথম ওয়েবকেমের নির্মাতা।

৬) প্রথম ওয়েবসাইটঃ স্যার টিম বার্নাস লী লন্ডনে জন্ম নেওয়া একজন পদার্থবিধ। তিনি চিন্তা করেছিলেন এমন একটি হাইপারলিঙ্কের কথা যার দ্বারা পৃথিবীর সবাই যুক্ত থাকবে। সেই মহৎ ব্যক্তির অসাধারন আবিষ্কারকে মানুষ উন্নতির চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
info.cern.ch হল বিশ্বের প্রথম ডোমেইন/ওয়েব সার্ভার। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসের ৬ তারিখে এটি পাবলিশ করা হয়।
আপনারা ইচ্ছা করলে এখনি সেই ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন (নাহ এখন না, টিউনটা শেষ করে নিন :P) সাইটটা এখনো আগের মতোই আছে, সাদামাটা করে রেখে দেওয়া হয়েছে যেন ইতিহাসটা অক্ষুন্ন থাকে।

৭) সবচেয়ে দামি ডোমেইনঃ সহজ এবং সুন্দর নামের ডোমেইন সবার কাছেই পরিচিত। আমি নিজে Yahoo তেমন ব্যবহার না করলেও Yahoo নামের ডোমেইনটা আমার প্রিয়। এই সুন্দর এবং সহজে মনে রাখার মতো ডোমেইন গুলো বিক্রি হয় অনেক দামে। আসুন দেখি এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ডোমেইনের নাম গুলো।
সবচেয়ে দামি ডোমেইনের নাম হল insure.com দাম, ১৬ মিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় দামি ডোমেইনের নাম হল sex.com যার দাম ১৪ মিলিয়ন ডলার।
অনেকেই ভাবছেন তাহলে গুগল বা ফেসবুকের ডোমেইনের দাম কত? এখানে যে নাম দুইটা দিলাম সেগুল কোন কম্পানি না, শুধু একটা ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস। দ্বিতীয় ডোমেইনটার দাম কেন যে এত বেশি হল সেটা হয়তো সবাই বুঝতে পেরেছেন। প্রথমটার কারন আমি নিজেও বুঝি নাই (insurance একটি ভালো বিজনেস এটা বুঝি :D)

৮) দেশভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যাঃ অন্যান্য দেশের কথা জানার আগে আসুন দেখে নেই আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা কত।
২০০৫ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির হার ছিল ০.২%
২০০৬ সালে ১%
২০০৭ সালে ১.৮%
২০০৮ সালে ২.৫%
২০০৯ সালে ৩.১%
২০১০ সালে ৩.৭%
২০১১ সালে ৫%
২০১২ সালে ৬.৩%
ভারতে ২০১২ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির হার ছিল ১২.৬% এবং একই সালে পাকিস্তানে ছিল ১০%।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা রয়েছে Iceland-এ ৯৭.৮% ইউএসএ তে ৭৮.৩% চিনে ৩৮.৪% এবং সবচেয়ে কম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দেশ হল উত্তর কোরিয়া যেখানে ০% মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
আমি সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছিলাম এই তথ্যটা জেনে! Iceland ছোট একটা দেশ অনেকে হয়তো এই দেশের নাম শুনেননি অথচ তারাই ইন্টারনেট ব্যবহারে এগিয়ে আছে। সমস্যা নেই আমারাও এগিয়ে জাচ্ছি, আমি তো ফেসবুকের নাম শুনেছিলাম কলেজে এসে কিন্তু এখন ক্লাস সিক্সের পলাপাইনও জানে এবং ফেসবুক ব্যবহার করে।

৯) সবচেয়ে বেশি বই লেখকঃ Philip M. Parker হলেন INSEAD নামের একটি বিজনেস স্কুলের একজন প্রফেসর। আমরা জানি বই লিখতে একটি টাইটেল লাগে, কি কি টপিক থাকবে তা লাগে, একটা একক ISBN (International Standard Book Number) লাগে, কভার পেজ লাগে, বেক কভার লাগে আর কি! সবচেয়ে বড় কথা হল বই লিখতে জ্ঞান লাগে।
Philip M. Parker এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০০০০ টি বই লিখেছেন। তিনি হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বইয়ের লেখক।
এই বেক্তির এত কঠিন কাজকে সহজ করেছে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট। ভদ্রলোক গণিত, জীববিজ্ঞান এবং অর্থনীতিতে অনার্স করেছেন (আমারতো একটা নিয়েই টানাটানি :P) বই লিখা সহজ কোন কাজ না, বই হল মানুষের দিক নির্দেশনা আর সেটা যদি ভুল দিকে যায় তাহলে সব শেষ!!

১০) ইন্টারনেটের ওজনঃ ইন্টারনেটেরও আবার ওজন আছে??? শুনলে মাথা ঘুরবে না তো কি করবে? তবে কথাটা সত্যি, এই ইন্টারনেট জগতের একটা সত্যিকারের ওজন আছে। আর সেই ইন্টারনেটের ওজনের পরিমাণ শুনলে তো আপনার মাথা আরো ঘুরবে
ইন্টারনেটে যেসব তথ্য আছে তার ওজন 2.0 × 10 ounces
গনিতবিদ কোন ভাই থাকলে একটু সাড়া দেন, আমার মাথা লাঠিমের মতো ঘুরতাসে যাই হোক এই ওজনটা সম্পর্কে একটু ধারনা আমি দিয়ে দেই ১ আউন্স=২৮.৩৪৯৫ গ্রাম। আমার মতো এবারো অনেকেই ওজনের পরিমাণটা বুঝবেন না আমার মতো অংকে কাচা ব্যক্তিবর্গের জন্য বাংলা হিসাব দিলাম
একটা ক্ষুদ্রতম বালির কণার ওজন যতটুকু হবে ততটুকু ওজন হল ইন্টারনেট নামের এই দৈত্যটার।

উপসংহারঃ অনেকগুলো আশ্চর্য তথ্য দিলাম, এবার বোনাস হিসেবে আরেকটি আশ্চর্য এবং খুবী দুঃখের খবর জানাতে চাই।
ইন্টারনেটে যেসব সার্চ হয় তার তিন ভাগের একভাগ হল খারাপ ভিডিও/ছবি নিয়ে :(ধারনা করা হয়েছে, ইন্টারনেটে যত ছবি আছে তার ৮০ ভাগ হল উলঙ্গ মেয়েদের ছবি। :'(
তথ্যটা দিতে গিয়ে অনেক সংশয়ে পরেছি দেবো কি দেবো না। এই কর্কশ এবং তিতা সত্যটা শুনে খুবী কষ্ট পেলাম
উপরের সবগুলো তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা,আমি শুধু একটু অলঙ্কার লাগানোর চেষ্টা করেছি। যদি মনে করেন কোন কিছু বাড়িয়ে লিখেছি তাহলে দয়া করে বকা না দিয়ে সুন্দরভাবে বলুন আমি ঠিক করে দেবো।
Thanks for reading this articels.

এই পোস্টটি এই লিংক এ আগে প্রকাশ করা হইছে: https://goo.gl/PVDi5Q

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

১. সনি এক্সপেরিয়া এক্সএ আল্ট্রা

এতে আছে ৬ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি ৭২০x১২৮০ পিক্সেল এর ডিসপ্লে। অক্টাকোর ২ গিগাহার্টজ কর্টেক্স-এ৫৩ মিডিয়াটেক এমটি৬৭৫৫ হেলিও পি১০ প্রসেসর।

র‌্যামে আছে ৩জিবি, সাথে ১৬ জিবি স্টোরেজ। এর রিয়ার ক্যামেরাটি ২১.৫ মেগাপিক্সেল আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ১৬ মেগা পিক্সেল। অপারেটিং সিস্টেম ৬.০.১ মার্শম্যালো। আর ব্যাটারি আছে ২৭০০ এমএএইচ। দাম পড়বে, প্রায় ২৮ হাজার টাকা।

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

২. নকিয়া ৬
এতে আছে ৫.৫ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি ১০৮০x১৯২০ পিক্সেল ডিসপ্লে। অক্টাকোর ১.৪ গিগাহার্টজ কর্টেক্স এ৫৩ কোয়ালকম এমএসএম৮৯৩৭ ৪৩০ প্রসেসর। সাথে ৩জিবি র‌্যাম এবং ৩২জিবি স্টোরেজ। এর রিয়ার ক্যামেরাটি ১৬ এমপি আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ৮ এমপি।

অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৭.১.১ নুগেট। ব্যাটারি আছে ৩০০০ এমএএইচ। দাম পড়বে প্রায় ২২ হাজার টাকা।
ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!


৩. মটোরোলা মটো জি টারবো সংস্করণ
৫ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ৭২০x১২৮০ পিক্সেল ডিসপ্লে। ১.৫ গিগাহার্টজ কর্টেক্স-এ৫৩ কোয়ালকম এমএসএম৮৯৩৯ স্ন্যাপড্রাগন ৬১৫ প্রসেসর। ২জিবি র‌্যাম, সাথে ১৬জিবি স্টোরেজ। রিয়ার ক্যামেরাটি ১৩এমপি আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ৫ এমপি। অ্যান্ড্রয়েড ৫.১.১ ললিপপ অপারেটিং সিস্টেম। ব্যাটারি ২৪৭০ এমএএইচ। দাম পড়বে প্রায় ১২ হাজার টাকা।

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

৪. সনি এক্সপেরিয়া জেড৩
৫.২  ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ১০৮০x১৯২০ পিক্সেল ডিসপ্লে। কোয়াডকোর ২.৫ গিগাহার্টজ ক্রেইট ৪০০ কোয়ালকম এমএসএম৮৯৭৪এসি স্ন্যাপড্রাগন ৮০১ প্রসেসর। ৩জিবি র‌্যাম সাথে ১৬জিবি স্টোরেজ। এর রিয়ার ক্যামেরাটি ২০.৭ মেগাপিক্সেল আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ২.২ এমপি। অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৪.৪ কিটক্যাট। ব্যাটারি ৩১০০ এমএএইচ। দাম পড়বে ৩০ হাজার টাকা।

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

৫. ওয়ান প্লাস টু
৫.৫ ইঞ্চি এলটিপিএস এলসিডি ১০৮০x১৯২০ পিক্সেল ডিসপ্লে। কোয়াড কোর ২.৭ গিগাহার্টজ ক্রেইট ৪৫০ কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫ প্রসেসর। ৩/৪জিবি র‌্যাম এবং ১৬/৬৪ জিবি স্টোরেজ। রিয়ার ক্যামেরাটি ১৩ এমপি আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ৫ মেগাপিক্সেলের। অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৫.১ ললিপপ। ব্যাটারি ৩৩০০ এমএএইচ। দাম পড়বে প্রায় ২০ হাজার টাকা।

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

৬. ভিভো ভি ৫ এস
৫.৫ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ৭২০x১২৮০ পিক্সেল ডিসপ্লে। অক্টাকোর ১.৫ গিগাহার্টজ, কর্টেক্স এ৫৩ মিডিয়াটেক এমটি৬৭৫০ প্রসেসর। ৪জিবি র‌্যাম সাথে ৬৪ স্টোরেজ। প্রধান ক্যামেরাটি ১৩ মেগাপিক্সেল আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ২০ মেগাপিক্সেলের। অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ মার্শম্যালো। ব্যাটারি ৩০০০ এমএএইচ। দাম পড়বে ২০ হাজার টাকা।

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

৭. এইচটিসি ডিজায়ার আই
৫.২ ইঞ্চি টিএফটি ১০৮০x১৯২০ পিক্সেল ডিসপ্লে। কোয়াডকোর ২.৩ গিগাহার্টজ ক্রেইট ৪০০ কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮০১ প্রসেসর। ২জিবি র‌্যাম সাথে ১৬জিবি স্টোরেজ। রিয়ার ক্যামেরাটি ১৩ এমপি, ফ্রন্ট ক্যামেরাটিও ১৩ এমপি। অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৪.৪.২ কিটক্যাট। ব্যাটারি ২৪০০ এমএএইচ।

ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!

৮. স্যামসাং গ্যালাক্সি এক্সকভার ৪
৫ ইঞ্চি আইপিএস এলসিডি ৭২০x১২৮০ পিক্সেল ডিসপ্লে। কোয়াডকোর ১.৪ গিগাহার্টজ প্রসেসর। ২জিবি র‌্যাম সাথে ১৬জিবি স্টোরেজ। রিয়ার ক্যামেরাটি ১৩ এমপি আর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ৫এমপি। অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ নুগেট। ব্যাটারি ২৮০০ এমএএইচ। দাম পড়বে প্রায় ২৪ হাজার টাকা।
ওয়াটারপ্রুফ ও কম দামে সেরা ৮টি স্মার্টফোনের বিস্তারিত!
সূত্র: গিজবট

YouTube Help BD বিডি কর্তৃক আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতার পর্ব - এক।

YouTube Help BD বিডি কর্তৃক আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতার পর্ব - এক।


এক হ্যাকারের কুখ্যাত থেকে বিখ্যাত হওয়া শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনী : কেভিন মিটনিক

এক হ্যাকারের কুখ্যাত থেকে বিখ্যাত হওয়া শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনী : কেভিন মিটনিক
সাধারণ জনগণের মতে পৃথিবীতে দুই দল কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ বাস করে। একদল অনেক বেশি জানা অ্যাকাডেমিক গুরু, যাদের কাজ হচ্ছে ০ আর ১ নিয়ে। অপর দল হচ্ছে হ্যাকার। পৃথিবীতে আবার দু’ধরনের হ্যাকার রয়েছে। একদল হচ্ছে লোভী হ্যাকার, যারা আরেকজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হানা দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার মতো জঘন্য কাজগুলো করে থাকে। অপর দলকে সমাজে বীর হিসেবে দেখা হয়, তারা দুর্নীতির মতো অপকর্মগুলোকে ফাঁস করে দেয়। তবে তাদের মধ্যে বিশেষ মিল হচ্ছে, তারা উভয়েই বেশ দক্ষ, বুদ্ধিমান এবং তাদের পুরো জীবনটাই উত্তেজনাপূর্ণ।

তবে হ্যাঁ, পৃথিবীতে কম হ্যাকারই তাদের হ্যাকিং ক্যারিয়ার পরিপূর্ণ উত্তেজনার সাথে কাটাতে পেরেছে। এই কম সংখ্যক হ্যাকারদের মধ্যে সবচাইতে আলোচিত হচ্ছেন কেভিন মিটনিক’। তো আসুন, এই কুখ্যাত-বিখ্যাত এই হ্যাকারের ব্যক্তিগত ইতিহাসে ডুব দিয়ে আসা যাক।

ম্যাজিক এবং ম্যানিপুলেশনের উপর আগ্রহ

১৯৬৩ সালের ৬ আগস্ট জন্ম নেয়া এই হ্যাকারের বেড়ে ওঠা আর পাঁচটি শিশুর মতো স্বাভাবিক ছিল না। কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ানো এবং বারবার বাজে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া মা শেলি মিটনিকের সাথে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় ভবঘুরে জীবন কাটাতো সে। এ কারণে আশেপাশে তেমন কোনো বন্ধুবান্ধব ছিল না তার। মায়ের ছেলে বন্ধুরা তার সাথে খারাপ আচরণ করতো, গালিগালাজ করে বেড়াতো। এ কারণেই সম্ভবত বেশ অল্প বয়স থেকেই তার মধ্যে কর্তাব্যক্তি বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছিল।

কেভিন মিটনিক
এত বাধা আর সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মিটনিক সবসময়ই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতো। আর খেলাধুলায় সে ছিল বেশ পারদর্শী। যদিও তার পুরো কল্পনা জুড়েই ছিল একটিমাত্র জিনিস- ম্যাজিক।

তার বয়স যখন দশ, এক প্রতিবেশী তাকে একটি ম্যাজিক ট্রিক দেখায়। তখন থেকেই তার ম্যাজিকের প্রেমে পড়া। বলা যায়, প্রথম দেখাতেই প্রেম! ছলচাতুরিপূর্ণ এই শিল্পে সে এতটাই আবিষ্ট হয়ে যায় যে, সারাদিন এসব নিয়েই পড়ে থাকতো। দর্শকদের চোখে ধোঁকা দেয়ার বিভিন্ন কৌশল উদঘাটন করার কাজে প্রায় পুরোটা সময়ই ব্যয় করতো।

মিটনিকের বয়স যখন তের, তাকে অধিকাংশ সময়ই স্থানীয় বুক স্টোরগুলোতে পাওয়া যেত। দেখা যেত, ‘দ্য বিগ ব্রাদার গেইম’ নামের একটি বই গোগ্রাসে গিলছে। বইটিতে ধাপে ধাপে দেখানো হয়েছিল, কীভাবে আরেকজনের সম্পত্তির দলিল, ড্রাইভিং হিস্টোরি, এমনকি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যগুলোতে প্রবেশাধিকার নেওয়া যায়। বইয়ে দেখানো পদ্ধতিগুলো মিটনিককে আরো বেশি কুশলী করে তোলে। সেগুলো তাকে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দুনিয়ার আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। সে এ ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিল, কেননা সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে এমন একটি নিখুঁত শিল্প, যার মাধ্যমে বেশ সহজেই যে কাউকে বোকা বানিয়ে নিজের বশে আনা যায় এবং ইচ্ছেমতো কাজ করিয়ে নেওয়া যায়।

সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে মিটনিকের মতামত
তার বয়স সতেরো পেরোবার আগেই এই শিল্পে এত বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছিল যে চাইলেই ফোনের অপর প্রান্তে থাকা মানুষটির কাছ থেকে গোপন নথি, ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারতো। হোক সে তার বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক কিংবা এমন ব্যক্তি যার সাথে আগে কখনো তার দেখা হয়নি। শুনতে অসম্ভব মনে হলেও, অধিকাংশ সময়ই তার কৌশলগুলো কাজ করতো!

হ্যাকিং জীবনের শুরু

সময়টা ছিল প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ার। মানুষ বড় বড় ফাইল বাদ দিয়ে ডিজিটাল স্টোরেজে তথ্য রাখা শুরু করছিল। কিন্তু তারা ডিজিটাল সিকিউরিটির ব্যাপারে তেমন ওয়াকিবহাল ছিল না। তাই মিটনিকের জন্য ঐ সময়টা ছিল ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে নিজের কর্মদক্ষতা দেখানোর যথাযথ সময়। কিন্তু সে প্রথমেই কম্পিউটারাইজড সিস্টেমের দিকে না ঝুঁকে একটিমাত্র ফোনকল ব্যবহার করে কতদূর যেতে পারে তা দেখতে চাইলো।

ছোট হ্যাকার রিউবেন পলের সাথে কেভিন মিটনিক
একদিন সে ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ মোটর ভেহিকেলসে টেলিফোন করে নিজেকে একজন পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচয় দেয় এবং নির্দিষ্ট একটি গাড়ির তথ্য জানতে চায়। স্বাভাবিকভাবেই অফিসের কেরানি তার কাছে ‘রিকোয়েস্টার কোড’ জানতে চায়, যা একপ্রকার নির্দিষ্ট পরিভাষা যেটি ডিএমভি থেকে তথ্য নেয়ার জন্য তার প্রয়োজন ছিল। তখন মিটনিক ডিএমভির প্রতিনিধি হয়ে স্থানীয় থানায় ফোন করে এবং একটি কোড বানিয়ে একজন নির্দিষ্ট পুলিশ অফিসারের রিকোয়েস্টার কোড কিনা তা নিশ্চিত হতে চায়। মূল কোডের সাথে মিটনিকের কোডের প্রায় মিল থাকায় পুলিশ স্টেশন থেকে মিটনিকের ভুল সংশোধন করার অভিপ্রায়ে আসল কোডটি বলে দেয়। যা ব্যবহার করে পরবর্তীতে ডিএমভিকে ফোন করে ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত যেকোনো গাড়ির তথ্য, নাম্বার প্লেট, মালিকের নাম সহজেই জেনে নিতে পারতো।

প্রশাসনের নজরে আসা

কেভিন একটি গবেষণা কেন্দ্রের ফোনি কম্পিউটার সিস্টেমের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে, যেখানে তার বন্ধু মিকাহ’র বাবা কাজ করতো। সে মিকাহ’র বাবার অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করে একটি নকল সিকিউরিটি সিস্টেম বাইপাস করাতো মূল সিস্টেমে, যেটি তাকে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করার সুযোগ দিতো।

সবকিছু ঠিকমতোই চলছিল। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল যখন তার বন্ধু মিকাহ এই সিকিউরিটি সিস্টেমে প্রবেশ করে, কিন্তু বের হওয়ার সময় নিজের ট্রেস না মুছেই চলে আসে। ব্যাপারটি সিস্টেমের নিরাপত্তাকর্মীদের নজরে আসার সাথে সাথে তারা এফবিআইকে জানায়। এফবিআই প্রথমে মিকাহ’র বাবাকে সন্দেহ করে, কেননা প্রবেশকারী আইপি এড্রেস তার বাবার কম্পিউটারের ছিল। বাবা যখন মিকাহ’র কাছে এ ব্যাপারে জানতে চায়, তখন সে নিজেকে বাঁচানোর জন্য কেভিনকে দায়ী করে।

তবে ঐ যাত্রায় মিটনিক বেঁচে যায়। কেননা তখন তার বয়স ছিল আঠারোর কম, আর তখনো কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের কোনো আইন চালু হয়নি। যদিও এফবিআই তাকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে সতর্ক করে যায়, কিন্তু গভীর আসক্তি তো এতো তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ার নয়!

প্রথম শাস্তি

কেভিন সবসময় দেখার চেষ্টা করতো একটি ফোনকল আর মডেম ব্যবহার করে কতদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। কিন্তু তার কখনো আর্থিক বা ব্যক্তিগত লাভের লোভ ছিল না। কিন্তু তবুও একটি ঘটনার পর সে শাস্তি থেকে রেহাই পায়নি।

একদিন মিটনিকের মাথায় ইউএস লিজিং (US Leasing) এর মতো বিশাল একটি কোম্পানির সিস্টেম হ্যাক করার চিন্তা আসে। এবার সে নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তাদের জানালো যে তাদের সিস্টেমে একটি বাগ আছে, যা পুরো সিস্টেমের তথ্যগুলো নষ্ট করে দিতে পারে। তখনকার সময় কোম্পানির কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করে এডমিন অ্যাকাউন্টের প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট ছিল। কোম্পানি তাকে বাগ ফিক্স করার জন্য সিস্টেমের অ্যাডমিন অ্যাকাউন্টের আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয়। পুরো কাজটি ভালোভাবে করার জন্য সে তার হ্যাকার বন্ধু ল্যুইসকে (Lewis de Payne) এই কাজে সাহায্য করার জন্য নিয়োগ করেছিল।

সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, কিন্তু ঝামেলা দেখা দিল যখন ল্যুইসের সাথে তার প্রেমিকা সুজান হ্যাডলির ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। দুর্ভাগ্যবশত, সুজানও ছিল বেশ ভালো হ্যাকার। সে সময় ‘সুজি হ্যাডলি’ নামে হ্যাকার কমিউনিটিতে বেশ পরিচিত ছিল সে। ছাড়াছাড়ির আগে মিটনিকের কার্যক্রম সম্পর্কে ল্যুইসের কাছ থেকে জানতে পারে এবং কোম্পানির ব্যাপারে ল্যুইসের কাছে থাকা বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করে রেখে দেয়। পরবর্তীতে তথ্যগুলো ব্যবহার করে ঐ কোম্পানির সিস্টেম হ্যাক করে এবং প্রত্যেকটি প্রিন্টার মেশিনে মিটনিকের নাম লেখা কাগজ ছাপিয়ে দেয়।

লিউইসের বান্ধবী সুজানা হ্যাডলি
এছাড়াও সুজান জানতে পারে মিটনিক এবং লিউইস মিলে একটি স্থানীয় ফোন কোম্পানির সিস্টেম হ্যাক করে কর্মচারীদের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। সে সাথে সাথে স্থানীয় পুলিশকে এ ব্যাপারে জানায় এবং মিটনিককে ধরিয়ে দেয়।

এবারো আঠারো বছর না হওয়ায় তাকে মাত্র ৯০ দিনের জন্য কিশোর অপরাধী হিসেবে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। যদিও সে সময় আদালতের বিচারক কী কারণে মিটনিককে এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। কেননা হ্যাকিং, ক্র্যাকিংয়ের মতো ব্যাপারগুলো তখনো তেমনভাবে চিন্তা করার বিষয় ছিল না।

আইটি কোম্পানিতে যোগদান

ঐ ঘটনার পর চারদিকে মিটনিকের কুখ্যাতির কথা ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে আইটি কোম্পানিগুলোর ভূরিভোজ বা আড্ডায় তাকে নিয়ে বেশ আলোচনা হতো। ‘লা টাইমস’ নামের একটি পত্রিকা তার অপরাধ কর্মকাণ্ডের কথা বেশ গুরুত্বের সাথে রিপোর্ট করেছিল। যদিও এগুলোর কোনোটাই সমস্যা ছিল না, কিন্তু প্রথম দিকে অনেক কোম্পানিই মনে করতো, একজন হ্যাকারকে চাকরি দিলে সে কোম্পানিতে বসেই তার দক্ষতা খারাপ কাজে ব্যবহার করবে। তাই তাকে কোনো কোম্পানিই চাকরি দিতে আগ্রহী ছিল না।

কিন্তু ভাগ্য তার সহায় ছিল। একটি কারিগরি স্কুলে ছ’মাস কম্পিউটিং কোর্স শেষ করার পর, স্কুলের রেফারেন্সেই জিটিই (GTE) নামের একটি টেলিফোন কোম্পানিতে ইন্টার্ন করার সুযোগ পায় মিটনিক। সেখানকার প্রতিনিধিরা তাকে তাদের সিস্টেম হ্যাক করে দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দেয়ার সাথে সাথে সিস্টেমের জন্য শক্তিশালী নিরাপদ ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য বলে। একজন হ্যাকারের জন্য এর চাইতে ভালো কাজ আর কী হতে পারে?

কিন্তু যখন সে ফোন কোম্পানিটির সংবেদনশীল তথ্যতে বারবার প্রবেশাধিকারের সুযোগ পেতে থাকে, জিটিই তাকে একটি নিরাপত্তা ফর্ম পূর্ণ করার জন্য বলে, যেখানে ঐ কোম্পানিতে স্থায়ীভাবে কাজ করার অফার দেওয়া হয়। কিন্তু মিটনিক বুঝতে পারে জিটিইতে তার সময় শেষ হয়ে আসছে। পরবর্তীতে মিটনিকের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে তারা তার আসল কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে পারে এবং মাত্র নয়দিনের মাথায় কোম্পানি থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

মিটনিক তার আগের জীবনে আবার ফিরে আসে।

১.৪ মিলিয়ন ডলারের জরিমানা, এরপর…!

মিটনিক বেশ ভালোভাবেই নতুন তৈরি হওয়া মেয়েবন্ধুর সাথে সম্পর্ক আর হ্যাকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো। অবৈধভাবে বড় কোনো কোম্পানিতে হানা না দিলেও সন্ধ্যার পরে অনেক সময় ধরে বিভিন্ন দুর্বল সিস্টেমে প্রবেশ করার মাধ্যমে নিজের দক্ষতাগুলো ঝালিয়ে নিতো। এমনই এক সন্ধ্যায় ‘সান্তা ক্রুজ অপারেশন (Santa cruz operation)’ নামের একটি সফটওয়্যার কোম্পানির সিস্টেম হ্যাক করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে সে। এবার ব্যাপারটা শুধু জেলে পাঠানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না। সান্তা ক্রুজ অপারেশন তার নামে মামলা করে। মামলায় রায়ে তাকে এবং তার বান্ধবীকে ১.৪ মিলিয়ন করে ২.৮ মিলিয়ন ডলারের জরিমানা করা হয়।

মিটনিকের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু;
কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, সান্তা ক্রুজ অপারেশন তার নামে মামলাটি করেছিল শুধুমাত্র তার উপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে কীভাবে তাদের নেটওয়ার্কে সে হানা দিয়েছে সেটি জানার জন্য। মিটনিক এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করে এবং শুধুমাত্র তিন বছর প্রবেশন অ্যাক্টের আওতায় থাকার অভিপ্রায়ে জেল-জরিমানা থেকে মুক্তি পেয়েছিল।

এরিক হেইনজের আগমন

১৯৮৯ সাল, তিন বছরের প্রবেশন অ্যাক্টের আওতায় থাকতে থাকতে হ্যাকিং থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া কেভিন মিটনিক নতুন অনুপ্রেরণায় আবার মাঠে নামে। তার অনুপ্রেরণার নাম ছিল ‘এরিক হেইনজ’। এরিক ছিল তখনকার হ্যাকিং কমিউনিটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে দক্ষ এবং সফল হ্যাকার। এক বন্ধুর কাছ থেকে এরিক সম্পর্কে জানার পরপরেই তার সাথে দেখা করার জন্য উঠেপড়ে লাগে মিটনিক। টানা কয়েকদিন চেষ্টার পরে তাদের দেখাও হয়ে যায়।

প্রথম দেখাতেই মিটনিক এরিকের ব্যাপারে বেশ আকর্ষণ অনুভব করে। নিজের কাজ সম্পর্কে তাকে জানায় এবং এরিকের সাথে কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে। এরিক জানায়, তার কাছে পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় যেকোনো টেলিফোন সিস্টেমে প্রবেশ করার মতো কোড আছে। এমনকি ক্যালিফোর্নিয়ার সবরকমের ফোনকল শোনার মতো ক্ষমতা তার আছে। তবে কিছু কারণে এরিককে তার সন্দেহ হয়। প্রথমত, সে ছিল ভীতু প্রকৃতির। কিন্তু এরিক যে সমস্ত কাজ করছে বলে জানিয়েছে সেগুলো করতে বেশ সাহসের প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, আপাতদৃষ্টিতে এরিকের কোনো কাজ না থাকলেও তাকে বেশ বিত্তশালী মনে হয়েছে।

এই সন্দেহ দূর করার জন্য সাক্ষাৎ শেষে মিটনিক কিছু প্রচলিত পদ্ধতিতে তার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে খালি হাতে ফিরতে হয়। এরিক যেন হাওয়া থেকে এসে হাওয়াতে মিলিয়ে যাওয়া একজন। এরিকের এই গভীর রহস্যময়তা মিটনিককে তার ব্যাপারে আরো আগ্রহী করে তুলে। পরবর্তীতে আরো কিছু তদন্তের পর মিটনিকের বিশ্বাস হতে শুরু করে, এরিক আসলে কোন হ্যাকার নয়। এমনকি একসময় মিটনিক এরিকের ফোনে আঁড়িপাতাও শুরু করে এবং তার পূর্বের ধারণার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়। কিন্তু ততদিনে বেশ দেরি হয়ে গেছে।

হ্যাকার হিসেবে পরিচয় দেওয়া এরিক ছিল এক এফবিআই এজেন্ট, যে কিনা আরেক এজেন্টের সাথে একত্রিত হয়ে মিটনিককে ফাঁদে ফেলে জেলে পাঠানোর পরিকল্পনায় করছিল। তারা চাইছিল মিটনিক যেন ঐ এজেন্টের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে গিয়ে তার ফোনে আঁড়ি পাতে। তাদের ধারণা ছিল মিটনিক আড়িপাতার কাজটি বেশ ভালোভাবেই করতে পারে। তাদের ধারণাও সঠিক ছিল। মিটনিক ফাঁদে পা দেয়, এরিকের ফোনে আড়ি পাতে। সেই সুযোগে এফবিআই তার নামে সার্চ ওয়ারেন্ট বের করে।

কিন্তু ভাগ্যক্রমে এফবিআইয়ের কাছে মিটনিকের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছিল না। এই সুযোগ মিটনিককে তাদের থেকে এগিয়ে রাখে। সে তাদের পাতা সম্ভাব্য ফাঁদগুলো বেশ সচেতনতার সাথে এড়িয়ে চলে। মিটনিক জানতো এফবিআই বিভিন্ন দিক থেকে তার উপর নজর রাখছে। তাই তাকে ফাঁদে ফেলতে পারে এমন সব জিনিস অ্যাপার্টমেন্ট থেকে সরিয়ে ফেলেছিল। একদিন এফবিআই সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে মিটনিকের অ্যাপার্টমেন্টে আসে এবং খালি হাতে ফিরে যায়। তবে তারা মিটনিককে কারাগারে পাঠাতে এত বেশি উতলা হয়ে ওঠে যে, ঐ ঘটনার পরেও তাকে ধরার নতুন সুযোগ খোঁজে।

এরিক ওয়েইস, মিটনিকের নতুন পরিচয়

কয়েক মাস পরেই মিটনিক তিন বছরের প্রবেশন শেষ করে বেরিয়ে আসে এবং স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ পায়। কিন্তু তা ছিল ক্ষণিকের জন্য। এর মাত্র তিনদিনের মাথায় এফবিআই ওয়ারেন্ট ইস্যু নিয়ে মিটনিকের মায়ের বাসায় যায়, যেখানে দু’দিনের জন্য মিটনিক অবস্থান করেছিল।

সে বুঝে গিয়েছিল, কারাগার থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই তাকে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পালাতে হবে। নতুন কোনো পরিচয় নিয়ে এফবিআইয়ের হাতের নাগালের বাইরে থাকতে হবে। যে-ই ভাবা, সেই কাজ। স্বপ্ন আর প্রতারণার শহর বলে খ্যাত লাস ভেগাসে পাড়ি জমায় মিটনিক। সেখানে তার সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট এবং সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বার যোগাড় করে। তখন থেকে সে হয়ে উঠে ‘এরিক ওয়েইস’। নামটি ছিল তার গুরু, বিখ্যাত ম্যাজিশিয়ান হ্যারি হুডিনির।

পরিচয় পাল্টালেও মিটনিকের টাকাপয়সা সব তার আসল নামেই ছিল। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় যখন জিমের লকারে রাখা ১১ হাজার ডলার চুরি হয়ে যায়। তখন তার একটি চাকরির প্রয়োজন হয়। পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেখে ডেনভারে পাড়ি জমায় এবং রবার্ট অ্যান্ড ওয়েন নামের একটি ল’ ফার্মে চাকরির জন্য আবেদন করে।

ইন্টার্ভিউতে সে ভালোই করে। কিন্তু চাকরি পাওয়ার জন্য তার প্রয়োজন ছিল একটি রিজিউম এবং আগের কোম্পানির রেফারেন্স। অবশ্য এগুলো তৈরি করতে তার কোনো সমস্যাই ছিল না। সে দক্ষ হাতেই তার রিজিউম তৈরি করে। রিজিউমে উল্লিখিত কোম্পানির নামে একটি নকল ফোন বুথ তৈরি করে। যখন তথ্য যাচাই বাছাইয়ের জন্য ফোন করা হয়, তখন মিটনিকই ফোন ধরে ঐ ফার্মকে জানায় যে, রবার্ট এন্ড ওয়েনে আবেদন করা ছেলেটি তাদের ফার্মেই কাজ করতো। এভাবেই সে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে সেখানে চাকরি পেয়ে যায়। কিন্তু হ্যাকিং থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেনি।

নোকিয়া, মটোরোলা ও এনইসির সিস্টেমে অবৈধ প্রবেশ

নব্বই দশকের প্রথম থেকে মোবাইল ফোন প্রযুক্তি বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছিল। মিটনিকের আগ্রহ ছিল ফোনগুলোতে ব্যবহৃত সোর্স কোডের ব্যাপারে। ঐ সময় নোকিয়া, মটোরোলা এবং এনইসি ছিল সবচাইতে জনপ্রিয় মোবাইল ফোন কোম্পানি। তাই মিটনিকের হিট লিস্টে এরাই ছিল সবার প্রথমে।

নোকিয়া ও মটোরোলা হ্যাকিং করতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। তাদের সিস্টেমে ঢুকে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোকে নেয়ার পর খুব সহজেই ট্রেস ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় এনইসির বেলায়। সিস্টেমে ঢুকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে কেউ অনুসরণ করার চেষ্টা করছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য যখন দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষা করতে যায়, তখন সে এনইসির এডমিনের কাছে আসা একটি ই-মেইল ইন্টারসেপ্ট করার সুযোগ পায়। সেখানে বলা হয়েছে, কেউ একজন এনইসির সোর্সকোড লস অ্যাঞ্জেলসের কোনো একটি সার্ভারে অপসারণ করার চেষ্টা করছে। আর এ ব্যাপারে এফবিআই পুরোপুরি অবগত।

মিটনিক এতদিন এই ভয়টিই করে আসছিল। সে জানতো এফবিআই তার পিছু ছাড়বে না। সে বুঝে গিয়েছিল, এখন থেকে তাকে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।

আবারো আইনের আওতায়

মিটনিক তার নতুন জীবন বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করছিল। তবে তার ধারণাই ছিল না যে, অতি শীঘ্রই এই জীবনের ইতি ঘটবে।

সে দুপুরের খাবারের সময়টাতে ফোনে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করে কাটাত। আর এই ব্যাপারটাই ফার্ম কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তারা মনে করেছিল মিটনিক এই সময়টা কোম্পানির বাইরে অন্যান্য গ্রাহকদের টাকার বিনিময়ে পরামর্শ সেবা দেয়, যা ছিল ফার্মের নিয়ম বহির্ভূত। এই কারণে মিটনিক দ্বিতীয়বারের মতো চাকরি হারায়। সময়টা ছিল ১৯৯০, মিটনিকের বয়স তখন ৩০।

মিটনিক প্রথমে যা করেছিল তা-ই আবার করলো। ‘এরিক ওয়েইস’ থেকে নিজের পরিচয় ‘ব্রিয়ান মেরিল’-এ স্থানান্তর করলো। নতুন ঠিকানা হলো সিয়াটল।

কিন্তু সবসময় যা স্বাভাবিকভাবে ঘটতো, এবার হলো তার উল্টোটা। নিজের ক্লোন করা ফোনের ট্রেস গোপন করার যে পদ্ধতি সে আবিষ্কার করেছিল, সেটি সিয়াটলের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আসে। তারা এ ব্যাপারে এফবিআইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

মিটনিক সবসময়ই তার পুরনো বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করতো। কিন্তু সে জানতো না, তাদেরই একজন এফবিআইয়ের ইনফর্মার হিসেবে কাজ করছে। যখন সে তার এক পুরনো বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে, এফবিআই জেনে যায় ব্রিয়ান মেরিল আর কেউ নয়, তাদের পুরনো পলাতক আসামি কেভিন মিটনিক।

এ ব্যাপারে সচেতন হওয়ার পর মিটনিক সিয়াটল ছেড়ে নর্থ ক্যারোলিনার রালেগে পাড়ি জমায়। কিন্তু তার ধারণাও ছিল না যে, এফবিআই তার ক্লোন করা ফোন কলগুলোকে অনুসরণ করতে করতে রালেগে তার অ্যাপার্টমেন্টে হানা দেবে। বাস্তবে সেটিই ঘটলো।
রালেগে গ্রেফতার হওয়ার পর
মিটনিক জানতো, তার নতুন অ্যাপার্টমেন্টে এমন কিছু নেই যা এফবিআইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। আর সে তার জাল পরিচয়পত্রের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল। কিন্তু অ্যাপার্টমেন্ট সার্চ করার সময় এক এজেন্ট একটি পুরনো স্কি জ্যাকেট খুঁজে পায়, যার পকেটে মিটনিকের নামে অনেক আগের একটি পে স্লিপ ছিল। প্রায় তিন বছর পলাতক থাকার পর ১৯৯৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মিটনিক আবার  আইনের আওতায় আসে।

‘ফ্রি কেভিন’ মুভমেন্ট ও অন্যান্য

আদালতে সব প্রমাণ মিটনিকের বিরুদ্ধে যায়। সে সর্বমোট ২৩টি ফোনকল জাল করে। প্রত্যেকটি ফোনকলের জন্য ২০ বছর করে প্রায় ৪৬০ বছরের জেল হয়। এছাড়াও সে প্রায় বিশ হাজার ক্রেডিট কার্ড জাল করার মাধ্যমে অধিগ্রহণ করেছিল, যেগুলো ব্যবহার করে সে বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করতে পারতো। তাছাড়া নোকিয়া, মটোরোলা ও এনইসির মতো কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০০ মিলিয়ন ডলার দাবি করে। যদিও মিটনিক ক্রেডিট কার্ড ও সোর্স কোড বিক্রির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিগত লাভের চিন্তাও করেনি।

যে কারণে মিটনিক হ্যাকিংয়ে আসক্ত ছিল
তার নামে কোনো সহিংস অপরাধের প্রমাণ না থাকলেও সে যেসব কাজ করেছিল, তার মাধ্যমে বিরাট বড় কোনো ক্ষতি সাধন করতে পারতো, যা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছিল। তাই আদালত অন্যান্য হ্যাকারদের মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য মিটনিকের বিচার উদাহরণ হিসেবে দেখাতে চেয়েছিল।

আদালত মিটনিককে তার বিরুদ্ধে পেশ করা প্রমাণগুলোর বিরুদ্ধে রিভিউ করার কোনো সুযোগ দেয়নি। এমনকি তাকে জামিনের আবেদন করার সুযোগও দেয়া হয়নি। এ ধরনের ঘটনা আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম ঘটে। মিটনিকের ডিফেন্স অ্যাটর্নি সহ আরো অনেকেই তার সাথে হওয়া অবিচারের নিন্দা জানায়। তারা আদালতের বাইরে ‘ফ্রি কেভিন’ আন্দোলনের প্রচারণা চালায়। স্থানীয় পত্রিকাগুলোও মিটনিকের পক্ষ নেয়।

‘ফ্রি কেভিন’ মুভমেন্ট
এতে কাজ হয়। আদালত তার ব্যাপারে সদয় হয়। সব কিছু বিবেচনা করে মিটনিককে পাঁচ বছরের জেল দেওয়া হয়। জরিমানার পরিমাণ তিনশ’ মিলিয়ন থেকে কমিয়ে ৪,১২৫ ডলার করা হয়। তিন বছরের জন্য কোনোরকম ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস ব্যবহারের ব্যাপারে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস ও ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্কহীন তিন বছর

মিটনিক তখন প্রবেশন অ্যাক্টের আওতায় ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্কহীন তিন বছরের দীর্ঘ সময় কাটাচ্ছে, রয়েছে অনেকগুলো দক্ষ চোখের নজরদারিতে। এর মধ্যেই তার জন্য ভালো সময়গুলো আসতে থাকে।

একদিন ইউএস সিনেটর ফ্রেড থমসমের চিঠি আসে। সিনেটের একটি অধিবেশনে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর অনুরোধ করা হয় মিটনিক যেন যুক্তরাষ্ট্র সরকার সাইবার অ্যাটাক থেকে কতটুকু নিরাপদ এ বিষয়ের উপর নিজের মতামত পেশ করে। এভাবেই শুরু। পরবর্তীতে মিটনিককে বিভিন্ন কোম্পানি, সরকারি এজেন্সি, প্রযুক্তি বিষয়ক আলোচনা, টিভি শো’তে ডাকা হতো সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কথা বলার জন্য। এ থেকে বেশ টাকাও উপার্জন হতে থাকলো। তবে সবচাইতে মজার বিষয় ছিল, যেখানে পুরো পৃথিবী তথ্য আদানপ্রদানে, আমন্ত্রণে, নিমন্ত্রণে ই-মেইল প্রযুক্তির ব্যবহার করতো, সেখানে মিটনিকের মতো একজন ‘প্রযুক্তি গুরু’ সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ছিল চিঠি আদানপ্রদানে।

তিন বছরের প্রবেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার পর
ঐ সময় হলিউডের প্রডিউসার জে.জে. আবরামস তাকে ‘Alias’ নামের টিভি সিরিজে অভিনয় করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, যেখানে মিটনিককে একজন সিআইএর কম্পিউটার স্পেশালিষ্ট হিসেবে দেখানো হয়। যদিও মিটনিকের রুল ধারণের সময় কম্পিউটারের কি-বোর্ড সিপিইউ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতো।

ঐ সময় থেকেই মিটনিক সিদ্ধান্ত নেয় সে একজন সিকিউরিটি কনসাল্টেন্ট হিসেবে আজীবন কাজ করে যাবে। আর নিজের অভিজ্ঞতা, জানা বিষয়গুলো বই আকারে লিখে যাবে। সেই সুবাদেই মিটনিক তার প্রথম বই ‘The Art of Deception’এ হাত দেয়। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা খাতায় লেখার মধ্যে বিরক্তি, পরিশ্রম দুটোই আছে। তাই সে আদালতে একটি কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য আবেদন করে। ভাগ্যক্রমে আদালত তাকে একটি ল্যাপটপ ব্যবহারের সুযোগ দেয়। কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যাপারে ছিল কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ২০০২ সালে বইটি পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে সবচাইতে বেশি বিক্রিত বইয়ের খেতাব পায়।

নেশাকে পেশা হিসেবে পাওয়ার অধ্যায়

তিন বছরের প্রবেশন অ্যাক্টের সময় শেষ হওয়ার পর মিটনিক তার হ্যাকিং জীবনে আবার ফিরে আসে। তবে এবার বৈধভাবে। মিটনিককে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাদের সিস্টেম হ্যাক করে দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং কীভাবে দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে সিস্টেমকে আরো উন্নত করা যায় সে বিষয়েও পরামর্শ চাওয়া হয়। এছাড়াও তার কোম্পানি ‘মিটনিক সিকিউরিটি কনসাল্টিং’ এফবিআই সহ প্রায় ৫০০ সরকারি, বেসরকারি কোম্পানির কর্মচারীদের এথিক্যাল হ্যাকিং শেখানো সহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে। এছাড়াও তিনি একজন নিয়মিত লেখক ও পাবলিক স্পীকার। ‘The Art of Deception’ ছাড়াও তার লেখা অন্যান্য বইগুলো হলো ‘The Art of Intrusion’, ‘Ghost in the Wires’ এবং ‘The Art of Invisibility’.

তথ্যসূত্র: Ghost in Wires: My adventures as the world’s most wanted hackerBy Kevin Mitnick

কৃতজ্ঞতা: blinkist.com
Post By: roar.media

ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!

ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
১৯৯২-৯৩ সালের কথা। সাবির আর সাবাব দুই ভাই (কাল্পনিক), স্কুল থেকে ফিরেই তারা বসে পড়ত টেলিভিশনের সামনে। প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে শুরু হতো একটা না একটা কার্টুন। নিত্যদিনের পড়াশোনার ফাঁকে এই আধা ঘণ্টার কার্টুন শো-ই ছিল তাদের জীবনে স্বস্তির এক ঝলক দমকা বাতাসের মতো। শুধু সাবির কিংবা সাবাবই না, নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশী বেশির ভাগ শিশুরই বিনোদনের প্রধান অবলম্বন ছিল গডজিলা, ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট, সামুরাই এক্স, পপাই, টম অ্যান্ড জেরি, উডি উডপেকার, জুমানজি কিংবা বানানাস ইন পাজামাস-এর মতো কার্টুনগুলো।

নব্বইয়ের দশকের মাঝমাঝি সময়ে এই তালিকায় যুক্ত হয় মীনা কার্টুনের নাম। তখন তো আর এখনকার মতো চ্যানেলের ছড়াছড়ি ছিল না, বিজ্ঞাপনের ভিড়ে মূল অনুষ্ঠান হারিয়ে যাওয়ার আশংকাও ছিল না। তাই শিশুদের সাথে তাদের বাবা-মায়েরাও যে একই কার্টুনে মজে থাকতেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
মীনা

নয় বছর বয়সী উচ্ছল, প্রাণবন্ত, সাহসী আর প্রগতিশীল মেয়ে মীনা। সে স্কুলে যেতে চায়, নতুন কিছু শিখতে চায়, জানতে চায়। বাবা-মায়ের শত আদরের সেই মেয়েটি সমাজের নানা বৈষম্য আর অযাচিত প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। ছোট ভাই রাজু, পোষা টিয়াপাখি মিঠু, ছোট বোন রাণী, বাবা, মা, দাদি, বন্ধু-বান্ধব, গ্রামবাসী এই নিয়েই তার জীবন। ইউনিসেফ এবং হান্না-বারবারা কার্টুনসের সহায়তায় প্রচারিত এই কার্টুনটির সাথে বাংলাদেশের কমবেশি প্রায় প্রতিটি শিশুই পরিচিত।

বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিন নির্মাণ ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা, মেয়েদের স্কুলে পাঠানো, অপরিণত মেয়েদের বিয়ে নয় বরং স্কুলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, যৌতুক বন্ধ করা, ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য সমান পুষ্টি ও সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা, সম-অধিকার পেলে মেয়েরাও অনেক কিছু করতে পারে এমন সব গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয় মীনা। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, হিন্দি এবং নেপালি ভাষায় প্রচারিত এই শিক্ষামূলক কার্টুনটির মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা ও তার প্রতিকারের বিষয়ে আপনা থেকেই সচেতন হতে শেখে শিশুরা। মীনার মতো এত জনপ্রিয় কার্টুন বাংলাদেশে খুব কমই আছে।
ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
গডজিলা

অ্যাডেলাইডের আগের দুটো প্রোডাকশন ‘ম্যান ইন ব্ল্যাকঃ দ্য সিরিজ’ এবং ‘এক্সট্রিম ঘোস্টবাস্টার্স’ এর স্টাইলের সাথে মিল রেখে ১৯৯৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর তোহোর গডজিলার অনুসরণে অ্যাকশন, সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার ঘরানার একটি কার্টুন তৈরি করে ডেভিড হার্টম্যান, স্যাম লিউসহ বেশ কয়েকজন নির্মাতা। ৪০ এপিসোডের এই কার্টুনটিতে মূলত মানবিক পরিবেশ বা বাস্তুসংস্থানের সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা এক দল গবেষককে চিত্রায়িত করা হয়েছে।

দর্শক কি আদৌ কোনোদিন ভুলতে পারবে দানবাকৃতির মিউট্যান্ট প্রাণীগুলোর অনিষ্ট থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেয়া গডজিলাকে? কিংবা ইয়ান জিয়েরিংয়ের নেপথ্য কণ্ঠে উপস্থাপিত বলিষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী ড. নিককে? শৈশবের সঙ্গী এলসি চ্যাপম্যান, ম্যান্ডেল ক্র্যাভেন, র‍্যান্ডি হার্নান্দেজ, মনিকা দুপ্রে অথবা বিশ্লেষণধর্মী রোবট নাইজেল আজীবন তাদের মানসপটে এক আনন্দের শিহরণ বইয়ে দিয়ে যাবে। এই কার্টুনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে ‘গডজিলা’ নামে সিনেমাও বানানো হয়েছে।
ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটিয়ার্স

পাঁচ প্ল্যানেটিয়ার্স বা মর্ত্যবাসীর আংটি থেকে বের হওয়া পাঁচ ধরনের ক্ষমতা ‘আর্থ, ফায়ার, উইন্ড, ওয়াটার ও হার্ট’ (মাটি, আগুন, বাতাস, পানি ও হৃৎপিণ্ড) একত্রিত হয়ে হাজির হওয়া ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট আর তার মুখ নিঃসৃত সেই অমোঘ বাণী ‘আই অ্যাম ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট’- নব্বই দশকের যেকোনো কার্টুনপ্রেমীকে নস্টালজিক করে দিতে বাধ্য! আমেরিকান অ্যানিমেটেড পরিবেশবাদী টেলিভিশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে কার্টুনটি নির্মাণ করেন টেড টার্নার এবং বারবারা পাইল।

১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত প্রচারিত এই সিরিজটির দর্শকপ্রিয়তার কারণে বাধ্য হয়ে ১৯৯৩ সালে সিরিজটির সিক্যুয়াল ‘দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চারস অফ ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট’ নির্মাণ করেন হান্না-বারবারা এবং টার্নার প্রোগ্রাম সার্ভিস। ভিলেন চরিত্রে খ্যাতনামা সব অভিনেতারা কণ্ঠ দেয়ায় সে সময় গোটা যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে এশিয়ায়ও ব্যাপক নন্দিত হয়ে ওঠে ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট।

পরিবেশ ধ্বংসকারী হগিশ গ্রিডলির অতর্কিত আক্রমণে নিজের বিশ্রামাগার, অরণ্য সব হারিয়ে পৃথিবীর প্রাণীদের অস্তিত্ব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন প্ল্যানেটের আত্মা গায়া। তিনি পৃথিবীর বুক থেকে কোয়ামে, লিংকা, হুইলার, গি এবং মা-টি নামক পাঁচজনকে বেছে নিয়ে পাঁচটি বিশেষ ক্ষমতাধর আংটি উপহার দেন তাদের। বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ দূষণ আর বাস্তুসংস্থানের জন্য হুমকি স্বরূপ কার্যক্রম বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয় তারা। কোনো বিপদে পড়লে পাঁচ আংটির ক্ষমতা মিলিয়ে তারা ডেকে আনে এই গ্রহের দলনেতা ক্যাপ্টেন প্ল্যানেটকে। কী চমৎকার একটি ধারণার মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদের মনে পরিবেশ রক্ষার চেতনা প্রবেশ করিয়ে দেয় এই কার্টুনটি! এই কার্টুনের উপর ভিত্তি করে ২০১৮ সালে লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও একই নামে একটি চলচ্চিত্র দর্শকদের উপহার দিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। চলচ্চিত্রটিতে নাম ভূমিকায় গ্লেন পাওয়েলের অভিনয় করার জোর সম্ভাবনা আছে।
ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
পপাই দ্য সেইলর ম্যান

‘আই অ্যাম পপাই দ্য সেইলর ম্যান’ থিম সং গাওয়া আর স্পিনিচ (পালংশাক) খেয়ে শত্রুদের সাথে ঢিশুম ঢিশুম করা পপাই চরিত্রটির প্রতি যেন এক ধরনের নেশা ধরে যায় শিশুদের। তাই তো ১৯১৯ সাল থেকে প্রকাশিত থিম্বল থিয়েটার কার্টুন ধারাবাহিকের দশ বছর বয়সে আগমন ঘটা এই চরিত্রটি ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কাঁপিয়েছে টেলিভিশন জগত। আর এখন ইউটিউবের দুনিয়ায়ও তার কদর কোনো অংশে কম নেই। মার্কিন কার্টুনিস্ট এলিজে ক্রিসলার সেগার এই জনপ্রিয় কার্টুনের নির্মাতা। ১৯৩০ এর দশকে পপাই একটি জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্রে পরিণত হয়।

উইলিয়াম বিলি কস্টেলোর নেপথ্য কণ্ঠে পপাই চরিত্রটি কিন্তু একটা সময় হুইফল হেনের মাথায় হাত বুলিয়ে শক্তি অর্জন করতো। ১৯৩২ সালের পরে এই বিষয়টি পরিবর্তন করে পালংশাকের আইডিয়াটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। স্ত্রী অলিভ অয়েল আর একমাত্র সন্তান সুইপিয়াকে সাথে নিয়ে কখনো কখনো সে শার্লক হোমসের মতো গোয়েন্দাগিরিতেও নেমে যায়। দু-তিন কৌটা স্পিনিচ খেয়ে অবলীলায় সে সুপারম্যানের মতো এক হাতে ট্রাক পর্যন্ত উঁচু করে ফেলতে পারে! তার এই জনপ্রিয়তা কার্টুন চরিত্র থেকে শুরু করে কমিকস বই, ভিডিও গেম, আর্কেড এমনকি বড় পর্দায় পর্যন্ত তাকে স্থান করে দিয়েছে। চলচ্চিত্রে পপাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অস্কার জয়ী অনবদ্য অভিনেতা রবিন উইলিয়ামস।
ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
বানানাস ইন পাজামাস

‘আমি যা ভাবছি তুমিও কি তাই ভাবছ বি১?’

‘আমারও তা-ই মনে হচ্ছে বি২।’

হেলেনা হ্যারিসের ‘বানানাস ইন পাজামাস’ সিরিজের মানবরুপী দুই বানানা বি১ আর বি২ মাথা ঘুরিয়ে হাসিমুখে যে বিনোদন ১৯৯৫ সাল থেকে এই পর্যন্ত দিয়ে আসছে, তার কোনো তুলনা হয় না। এটি মূলত একটি অস্ট্রেলিয়ান শিশুতোষ টেলিভিশন শো যা পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন ভাষায় ডাবিং করে প্রচারিত হয়েছে। সেই ধারায় বাদ যায়নি বাংলাদেশও। ক্যারি ব্লিটনের বানানাস ইন পাজামাস গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয় এই টেলিভিশন সিরিজটি।

সঙ্গী তিন টেডি বিয়ার অ্যামি, লুলু আর মর্গান, র‍্যাট ইন অ্যা হ্যাট আর বি১, বি২ ‘কাডলস অ্যাভিনিউ’ নামক একটি এলাকায় একসাথে বসবাস করে। তাদের দৈনন্দিন জীবনের হাসি, আনন্দ, নাচ, গান, পারস্পারিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা, বন্ধুত্ব আর দুষ্টুমির গল্প ‘বানানাস ইন পাজামাস’। সাউদার্ন স্টার এন্টারটেইনমেন্টের এই সিরিজটি থেকে ২০০৮ সালে নির্মাণ করা হয় একটি চলচ্চিত্র।
ভোলা যাবে না কখনো সেই নব্বই দশকের কার্টুনগুলোর কথা!
সামুরাই এক্স

সেই ১৯৯৪ সালের কথা। তখন না ছিল এত টিভি চ্যানেল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট; না ছিল এখনকার মতো হাজারো সহস্র মাঙ্গা সিরিজ (জাপানিজ অ্যানিমে)। তাই তখন রাজত্বটা ছিল রুরৌনি কেনশির একার। নবুহিরো ওয়াৎসুকির লেখা সচিত্র এই সিরিজটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ১৮৭৮ সালের জাপানিজ মেইজি পিরিয়ডের কথা। সে সময়ের এক দুর্ধর্ষ তলোয়ার যোদ্ধা কেনশি জাপানের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। শান্তি, সংঘর্ষ, প্রেম সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ এই সিরিজটি দেখলে অ্যানিমেশন চরিত্র কেনশির প্রতি মায়া জন্মাতে বাধ্য।

কেনশির গল্প নিয়ে পরবর্তীতে দুটি চলচ্চিত্র, মাঙ্গা, অ্যানিমে ফিল্ম সিরিজ সহ ছোট পর্দা, বড় পর্দায় অসংখ্য অনুষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে।