কারনঃ কমিউনিটি রুলস ভায়োলেশন এবং কপিরাইট কেস, বিশেষ করে বাংলাদেশি চ্যানেল হলে অনেক ক্ষেত্রে আপিল করারও সুযোগ দেয় না,
কেন এই সমস্যা এবং কি করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই:-
প্রথমত ইউনিক ভিডিও নিয়ে কাজ করতে হবে
ইউনিক ভিডিও কি?
যে ভিডিওটি আপনার প্রফেশনাল ভয়েস অথবা সাউন্ড (যেটা এক ভিডিওতে একবারই ব্যবহার হয়) সেটিই ইউনিক। যেমনঃ গান কোম্পানীর চ্যানেলগুলোতে গান। এখানে সে প্রফেশনাল সিঙ্গার দ্বারা গান গাইয়ে নিচ্ছে অথবা কারো মিউজিক কিনে নিচ্ছে অথবা নিজেই মিউজিক প্রডিউস করছে। আর ভিডিওতে নিজের ক্যামেরায় রেকর্ড করছে। তবে নিজে কোন কিছু ক্রিয়েট না করে (বিশেষ করে ছবি গুগল থেকে নিয়ে) অনেকে দাবি করছে সেই ভিডিও ওনার নিজের এবং ইউনিক। যা একান্তই ভুল ধারনা।
ইউনিকের উপর ইউনিক ভিডিও
এটা হচ্ছে কন্টেন্ট আইডি। কন্টেন্ট আইডি হচ্ছে এমন ভিডিও যেটা গুগলে এক পিসই আছে। সেইম ভিডিও বা ওলোট পালোট করেও কেউ গুগলে আপলোড করলেও ধরা খাবে। কারন আপলোড করলেই অটোমেটিক ইউটিউব ধরে ফেলবে। এই কন্টেন্ট আইডির জন্য এপ্লাই করতে হলে, সেই চ্যানেলে নূন্যতম ২৫টি ভিডিও থাকতে হবে। যার ভিডিও এবং অডিও সম্পূর্নই চ্যানেল মালিকের। এই ধরনের ভিডিও কেউ কপি বা চুরি করে তার নিজের চ্যানেলে আপ করলে, সাথে সাথে কপিরাইট ইনফ্রিগমেন্ট নোটিশ শো করবে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, দেখি অনেকেই এরকম ভিডিও তাদের চ্যানেলে আপ দিচ্ছে। অথচ তাদের চ্যানেলের কিছু হচ্ছে না। উত্তরঃ কেউ কন্টেন্ট আইডি ওয়ালা ভিডিও আপ দিলে মূল মালিকের কাছে নোটিশ যায়। মূল মালিক যদি চায় তাহলে সে কপিরাইট না দিয়ে সেই ভিডিওর রেভিনিউ নিয়ে যায়। (বুদ্ধিমানেরা এটাই করে)। উদাহরনঃ কোরিয়ান সিঙ্গার সাই এর গ্যাংনাম স্টাইল মূল ভিডিও ছাড়াও প্রায় ৪০০০ কপি ইউটিউবে আছে। অথচ সেই ৪০০০ কপির সকল ইনকাম সাই-ই নিয়ে নেন কন্টেন্ট আইডি সুবিধার জন্য।
ফেয়ার ইউজ পলিসি অথবা পাবলিক ডোমেইন
ইউটিউবে অন্যর অনুমিত ছাড়াই তার ভিডিও থেকে থিম নিয়ে ভিডিও তৈরি করা যায়। তবে এটা সবচেয়ে কষ্ট দায়ক কাজ। যেমনঃ ডোনাল্ড ডাক কার্টুনের কোন এপিসোড যদি কেউ ভয়েস চেঞ্জ করে তাহলেও সে কপিরাইট খাবে। ফেয়ার ইউজ মানে হচ্ছে আপনি ডোনাল্ড ডাক কার্টুন থেকে ডোনাল্ড ডাক চরিত্রটিকে নিয়ে আলাদা এবং নতুন ভিডিও তৈরি করতে হবে। বুঝতেই পারছেনএটা সর্ম্পূন কঠিন কাজ। আর পাবলিক ডোমেইন হচ্ছে নেটে কিছু ভিডিও আছে, যেগুলোর লাইসেন্স হচ্ছে পাবলিক ডোমেইন। মানে কোন মালিক নেই। সেই ভিডিও যে যার ইচ্ছামতো ব্যবহার এবং মডিফাই করত পারবে। প্রতিবছর ইউ এস সরকার প্রচুর ভিডিও বা ডিজিটাল কন্টেন্ট সরকারী কাজে ব্যবহারের পর পাবলিক করে দেয়। মানে সেগুলো তখন যে কেউ ইউজ করতে পারে। অবশ্য বাংলাদেশে এরকম নজির দেখা যায়নি।
ক্রিয়েটিভ কমন
এটাও অন্যের ভিডিও নিয়ে কাজ করার একটি পদ্ধতি। তবে এই ভিডিওতে অনুমতি দেয়াই থাকে যে কেউ ব্যবহার ও মডিফাই করতে পারবে। তবে ইদানীং কিছু ঘটনার কারনে এগুলো ব্যবহার করাও অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন। বিশেষ করে ইউটিউব এডিটর দিয়ে লোড করলেই অনেক ভিডিওতে কপিরাইট কেস শো করে। এছাড়া ক্রিয়েটিভ কমন ভিডিও নেয়ার পূর্বে কোন চ্যানেল থেকে নেয়ার আগে সেই চ্যানেলটি সোশ্যাল ব্লেড দিয়ে চেক করে নিতে হবে। যদি ক্রিয়েটিভ কমন থাকা সত্বেও কোন চ্যানেল কোন এমসিএন এ জয়েন করা থাকে। তাহলে সে চ্যানেল থেকে ৩০০ হাত দূরে থাকতে হবে। কারন সমস্যা সেই চ্যানেল মালিক না করলেও, স্বপ্রনোদিত হয়ে এমসিএন এর ম্যানেজাররা আপনার চ্যানেল কপিরাইট মেরে খেয়ে দিতে পারে।
কমিউনিটি গাইড লাইন
এই বিষয়গুলো নিয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করা নিষেধ। করলেই আপনি সাইজ হয়ে যাবেন।
(১) ন্যুডিটি বা সেক্সুয়াল কন্টেন্টঃ অযাচিত শরীর প্রদর্শন এবং সেক্সুয়াল ভিডিও।
(২) হার্মফুল বা ডেঞ্জারাস কন্টেন্টঃ কেউ আত্ন হত্যা করছে, গোলাগুলি (যুদ্ধ নয়, নরমাল), মারামারি
(৩) ভায়োলেন্ট অর গ্রাফিক কন্টেন্টঃ রক্ত, খুন, নাড়িভুড়ি বের হয়ে যাচ্ছে, জবাই করছে ইত্যাদি
(৪) কপিরাইটঃ অন্যের ভিডিও চুরি করা, উল্টানো পাল্টানো। কারন এগুলো মূল মালিক একদিন ম্যানুয়ালি দেখলেও ম্যানুয়াল কপিরাইট মারলে কোন আপিল ছাড়াই চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যাবে।
(৫) হেটফুল কন্টেন্টঃ কোন জাতি, ধর্ম বা গোষ্টিকে ছোট করে কোন ভিডিও আপলোড করলে।
(৬) থ্রেটঃ কাউকে কোন থ্রেট টাইপের ভিডিও আপলোড করলে।
(৭) স্পাম, মিসলিডিং ডাটা অথবা স্কামঃ অযাচিত বিজ্ঞাপন, টাইটেল, ডেসক্রিপশন আর ট্যাগের মধ্যে কোন সামঞ্জস্য না থাকলে। (যেমনঃ ভিডিও ফানি কিন্তু সালমান মুক্তাদির সেই ভিডিওতে নেই, অথচ আপনি বেশি ভিউ পাওয়ার জন্য সালমান মুক্তাদির ভিডিও লিখে ট্যাগ দিলেন)। এরপর কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তি যদি আপনার চ্যানেলে বিরুদ্ধে মিসলিডিং ডাটার কমপ্লেইন করে, তাহলে স্ট্রাইক খাবেন।
শেষের আগে
কিছু কপিবাজের কারনে বাংলাদেশে কাজ করা দূরহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে কপিবাজরা টিভি, নাটক, এমনকি অন্যের ভিডিও চুরি করে রেভিনিউ নেয়ার কারনে ইউটিউবের স্টাফরাও বাংলাদেশিদের উপর দারুন বিরক্ত। অনেকেই দেখি, ভিপিএন নিয়ে নিজের এডে নিজে ক্লিক করে। মনে রাখবেন, গুগলের লাষ্ট যে স্টাফ ইন্ডিয়া থেকে নিয়েছে তার মাসিক বেতন ১ কোটি ৮৫ লাখ রুপি। এবার ভাবুন, আপনার যদি চুরি করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কোনদিনই চোরের উপর বাটপারি করতে পারবেন না। কারন গুগল ১ কোটি ৮৫ লাখ রুপি মাসিক বেতন নিয়ে কোন স্টাফকে ঘাস কাটার জন্য নিয়োগ দেয় না।
প্রাসঙ্গিক অথচ অপ্রাসঙ্গিক কথা
ইউটিউবে বর্তমানে সেফ থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে নিজের মোবাইল/ ক্যামেরা দিয়েই ভিডিও রেকর্ড করে নিজেই কিছু করা। উদাহরনঃ মজার টিভি, ভাই ব্রাদার, আরো অনেক দেখবেন ওদের ভিডিও সম্পূর্ন ইউনিক। সাথে আরো যদি ভাবেন আমারতো ডিএসএলআর নেই, ভালো মাইক নেই, তাছাড়া টপিক পাচ্ছিনা কি নিয়ে কাজ করবো।
তাহলে আমি পরামর্শ দেবো, আপনি দেখে আসুন এই ভিডিও টি
https://www.youtube.com/watch?v=td6NcAZ5SWQ
আরো কোন প্রশ্ন থাকলে ঘুরে আসুন এই লিংকে https://www.youtube.com/watch?v=sgFOkj-_A1E
যে কথা না বললেই নয়
অন্যের হাজার হাজার ডলারের স্ক্রিন শর্ট দেখলে নতুনদের মাথা ঠিক থাকেনা। ডলার ইনকামের জন্য এজন্য অনেকেই এডাল্ট, চুরি করে কাজ করে দ্রুত ডলার ইনকাম করতে চায়। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, এসব করে যেমন পাপ এবং হারাম কামাই হয়, ঠিক তেমনি চ্যানেলটা সাসপেন্ড হলে হার্ট এ্যাটাকের মতোও হয়। বৈধ পথে আয় করেও মার্ক জাকারবার্গ গত মাস দুয়েক আগে এক স্যাটালাইট ব্লাষ্টের জন্য তিন বিলিয়ন ডলার লস করেছে। আর যে অবৈধভাবে লস করে তার অবস্থা আরো খারাপ হয়। কারন সেটা আল্লাহরই প্রতিশোধ। বিশেষ করে, যারা এডাল্ট নিয়ে আয় করে সেই টাকা দিয়ে চলা মানুষদের সাথে রাস্তার প্রষ্টিটিউটের কোন তফাৎ নেই। তাই আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন। সঠিক পথে, নিয়ম মেনে কাজ করলে সফলতা আসবেই।
নিজের ভিডিওতে কাজ করলে কোন সময় আপনাকে Problem এ পড়তে হবে না। আমার নিজের ৪টা চ্যানেল ২০১৩ থেকে আজ অবধি কোন কামউনিটি + কপিরাইট + চ্যানেল সাসমেন্ট কোন সমস্যা ফেস করতে হয়নি। ইউনিক ভিডিও নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং সেফ ইউটিবিং করেন।
কোন ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং অন্য কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট এ জানাবেন উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো
পৌষ্টটি আমাদের গ্রুপ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, এটি লিখেছেন----Shorif Bin Ismail