যারা অনিদ্রায় ভোগেন কেবল তারাই বুঝতে পারেন এর যন্ত্রণা কতোটা। সারা রাত এপাশ-ওপাশ করে কাটিয়ে দেন ঘুমের আশায়। কিন্তু ঘুমের দেখা মেলে না।
অনেকে ডাক্তারের পরামর্শে স্লিপিং পিলের সহায়তা নিয়ে থাকেন ঘুমের জন্য। আবার অনেকে বিনা প্রেসক্রিপশনে স্লিপিং পিল খেয়ে থাকেন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই হোক আর বিনা প্রেসক্রিপশনেই হোক না কেন স্লিপিং পিলের রয়েছে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
তাই ঘুম না আসার কারণে স্লিপিং পিল খেয়ে অন্য দিকে স্বাস্থ্যহানি করার কোনই প্রয়োজন নেই। এর চাইতে নজর দিন প্রাকৃতিক জিনিসের ওপর। এমন কিছু খাবার রয়েছে যা কাজ করবে অনেকটা ঘুমের ঔষধের মতোই। জানতে চান সেই খাবারগুলো কি কি? চলুন তবে জেনে নেয়া যাক।
১. কাঠবাদামঃ
কাঠবাদামকে সুপার ফুড বলা হয়। কারণ কাঠবাদামের ভিটামিন ও মিনারেলস আমাদের নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। কাঠবাদামের মিনারেল ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের উদ্রেক করে। জার্নাল অফ অর্থমলিকিউলার মেডিসিনের একটি গবেষণায় প্রকাশিত হয়, ‘যখন আমাদের দেহে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কমে যায় তখন আমাদের অনিদ্রার সমস্যা শুরু হয়, কাঠবাদাম এই ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে দেয়’।
২. মধুঃ
ঘুমুতে যাওয়ার আগে মাত্র ১/২ চা চামচ মধু খাওয়ার অভ্যাস ঘুমাতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা যায় মধুর প্রাকৃতিক চিনি আমাদের দেহের ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় এবং ট্রাইপ্টোফেন নামক হরমোন খুব সহজে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে। এতে করে ঘুমের উদ্রেক হয়।
৩. কলাঃ
নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট শন ট্যালবট বলেন, ‘ঘুম না আসলে একটি কলা খেয়ে নিন, কলার পটাশিয়াম মস্তিষ্ককে রিলাক্স করতে সহায়তা করে’। কলার ম্যাগনেসিয়ামও আমাদের মাংসপেশি শিথিল করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মাইকেল ব্রেউস বলেন, ‘ঘুমুতে যাওয়ার আগে কলা খান বা কলার স্মুদি তৈরি করে পান করুন, ঘুম আপনাআপনিই চলে আসবে’।
৪. মিষ্টি আলুঃ
মিষ্টি আলু পটাশিয়ামের অনেক ভালো একটি উৎস যা আমাদের মাংসপেশি, নার্ভ শিথিল করতে কাজ করে। এতে করে আমাদের মস্তিষ্কও অনেকাংশে রিলাক্স হয়। নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট শন ট্যালবট বলেন, ‘মাত্র অর্ধেকটা পরিমাণে মিষ্টি আলু ঘুমের জন্য অনেক ভালো কারণ এতে গয়েছে পটাশিয়াম এবং কার্বস’।
৫. দুধঃ
ঘুমের ঔষধের মতো কাজ করতে বিশেষভাবে কার্যকরী যে খাবারটি তা হচ্ছে দুধ। গবেষকগণ বলেন দুধের ক্যালসিয়াম মেলাটোনিন উৎপন্ন করে যা আমাদের দেহের ২৪ ঘণ্টার ঘুম ও জেগে থাকার সাইকেলটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তাই ঘুম না আসলে ১ গ্লাস উষ্ণ গরম দুধ পান করে নিন। দেখবেন খুব সহজেই ঘুম চলে আসবে।
৬. ডিমঃ
ঘুমের জন্য কার্যকরী আরেকটি সুপাদ ফুড হচ্ছে ডিম। গবেষণায় দেখা যায় ডিম উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যা রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে যা পুরোরাত নিশ্চিন্তে ঘুমুতে সাহায্য করে থাকে। তাই রাতের খাবারে রাখুন সেদ্ধ ডিম অথবা প্রোটিন সমৃদ্ধ কোনো খাবার।
৭. হারবাল চা বা গ্রিন টিঃ
গ্রিন টি বা হারবাল চায়ে রয়েছে থায়ানিন যা ঘুমের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক। ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ১ কাপ গ্রিন টি বা অন্য যে কোনো হারবাল চা অনিদ্রা দূর করতে, গভীর ঘুমুতে এবং ঘুমের অন্যান্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।