ভুতুড়ে শহর !!! এক ভুতের ভয়েই অনেকেই কাহিল হয়ে যায় । আর পৃথিবীতে এমন কিছু শহর আছে যাদেরকে ভুতুড়ে শহর বলা হয়। এর কয়েকটা ট্যুরিষ্টদের জন্য উন্মুক্ত, কয়েকটি খুবই বিপদজনক , আর কয়েকটি জায়গায় যাওয়া অবৈধ। চলুনন দেখে আসি এমন কিছু ভুতুড়ে শহরের বিস্তারিত-
১) KOLMANSKOP (Namibia) (কোলমানসকোপ)
কোলমানসকোপ, দক্ষিন নামিবিয়ায় অবস্থিত একটি ভুতুড়ে শহর। লুদেরিটজ সমুদ্রবন্দর থেকে কয়েক কিলোমিটার ভিতরে। ১৯০৮ সালে নামিব মরুভুমিতে মাগনা মাগনা ডায়মন্ড পরে থাকতে দেখে কালা মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়, সাথে সাদা মানুষগুলা ছোকছোক স্বভাব মোতাবেক রক্ত চুষতে চলে আসে। মাএ দুই বছরের ভিতর আকখা মরুভুমির ভিতর একটা জাকজমকপূর্ন শহরের জন্ম হয়। এমন একটা শহর যেখানে ক্যাসিনো, স্কুল, হসপিটাল ও বিলাসবহুল আবাসিক ভবন ছিল।
কিন্তু কিছুদিন পর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ফলে ডায়মন্ডের দাম কমে যায়। যা হবার তাই হলো, দাম কমলে কারও দাম থাকে না। তাই এখান থেকে দলে দলে লোক চলে যেতে থাকে। ১৯৫০ সালের ভিতর এই জমজমাট শহরটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
ফাইনালি মরুভুমির বালু তার হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পায়। এখন মানুষ এই ভাঙ্গা ঘর বাড়ি ও বালু দেখতে ২৪০০ ডলার খরচ করে।
২) PRYPIAT (প্রিপ্লাট)
Prypiat হলো উত্তর ইউক্রেনের একটি পরিত্যক্ত শহর যাকে বলা হয় “যোন অফ এলিয়েনেশন”। এটা ছিল চারনোবিল পারমানবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্মীদের আবাসিক এলাকা, ১৯৮৬ সালে চারনোবিল দুর্যোগের পর পরিত্যক্ত হয়। দুর্ঘটনার পূর্বে এর জনসংখ্যা ৫০,০০০ এর কাছাকাছি ছিল।
এই কিছুদইন আগে পর্যন্তও, জায়গাটি কার্যকরীভাবে ছিল একটি যাদুঘর, সোভিয়েতপরবর্তী যুগের দলিল হিসাবে। অ্যাপার্টমেন্ট ভবন, সমস্ত সুইমিং পুল, হাসপাতাল এবং অন্যান্য ভবন বাতিল করে দেওয়া হয়, এবং বিল্ডিং ভেতরের সবকিছু রেকর্ড, কাগজপত্র, TVS, বাচ্চাদের খেলনা, আসবাবপত্র, পত্র, এবং পোশাক সহ বাকি যা ছিল তা ওভাবেই পরিত্যাগ করা হয়। অধিবাসীদের শুধুমাত্র একটি স্যুটকেসে নথি, বই ও কাপড় নিবার অনুমতি পেয়েছিল যা কন্টামিনেটেড হয়নি। তবে ২১ শতকের শুরুতে প্রায় সব অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে যা কিছু ছিল তা সম্পূর্ণভাবে ডাকাতি হয়ে যায়। ডাকাতদল এখন থেকে এমন কি বাথরুমের কমডের ঢাকনিটাও তুলে নিয়ে যায়। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ডাকাতির ঘটনা ছিল এটা, ব্যপ্তি কাল ছিল কয়েকদিন।
এখন পর্যন্ত জায়গাটি মানুষ বসবাসের অনুপযুক্ত। পারমানবিক শক্তির ক্ষমতায় আমি স্তমভিত।
৩) SAN ZHI (শেন ঝি)
উত্তর তাইওয়ান মধ্যে, এই আধুনিক গ্রামটি ধনীদের বিলাসি অবকাশযাপন কেন্দ্র হিসাবে নির্মান করা হচ্ছিল। নির্মানের সময় এখানে একটি মারাত্মক দুর্ঘটনার অনেকেই মারা পরে ফলে নির্মান স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে অর্থের অভাব এবং সমন্বয়ের অভাবে নির্মান কাজ স্থায়ীভাবে থামিয়ে দেয়া হয়। এবং এই অদ্ভুতদর্শন বাড়ি গুলো এভাবেই পরে থাকে। পার্শ্ববর্তী সময়ে গুজব ছরিয়ে পরে যে, যারা মারা গেছিল তাদের ভুত এই শহরে ঘুড়ে বেরায়।
পরে এই ভুতের কাহিনীই সরকার তাদের এই প্রজেক্ট বাতিলের কাভার আপ হিসাবে ব্যবহার করে। মানে হইলো তারা উপর মহলের লোক দের ভয় দেখায় যে যদি এই ভবন গুলা ভাঙ্গা হয় তাহলে এই ভুত গুলো তাদের ক্ষতি করবে। হোয়াট এন আইডিয়া স্যার জি !!!
৪) CRACO (ক্রাকো)
Craco, ইতালির ব্রাসিলিকাটার বিভিন্ন অঞ্চল এবং মাটিরা প্রদেশসমূহ মধ্যে অবস্থিত,টরান্টো উপসাগর থেকে ২৫ কিমি ভিতরে। মধ্যযুগীয় এই পাহাড়ি শহরে এলাকায়, পাহাড়ি গম এবং অন্যান্য ফসল চাষের জন্য আদর্শ ছিল না। ১০৬০সাল থেকে এই শহরটির মালিকানা আর্চবিশপদের ছিল।
১৮৯১ সালে, Craco জনসংখ্যা ২০০০ ছিল, কৃষি উৎপাদে সমস্যা ও দারিদ্রতার কারনে ১৮৯২ থেকে ১৯২২ সালের মধ্যে ১৩০০ জনের মত অধিবাসীকে উত্তর আমেরিকা সরানো হয়েছে। দরিদ্রতা, চাষাবাসে সমস্যা, ভূমিকম্প, ভূমিধস, এবং যুদ্ধের কারনে ১৯৫৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে Craco ধ্বসস্তুপে পরিনত হয়। ১৯৬৩ সালে অবশিষ্ট বাসিন্দাদের একটি কাছাকাছি উপত্যকায় স্থানান্তর করা হয়।